Wellcome to National Portal
মেনু নির্বাচন করুন
Main Comtent Skiped

ছবি
শিরোনাম
সীতাকুন্ডের তীর্থস্থান ও পর্যটন এলাকা সমূহ
বিস্তারিত

বাংলাদেশের সীতাকুন্ডে অবস্থিত প্রকৃতির এক অপরূপ লীলাভূমি সীতাকুন্ডের চন্দ্রনাথ পাহাড়- এক অপরূপ তীর্থ ও পর্যটন স্পট ।চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড বাজার থেকে ৪কি.মি. পূর্বে চন্দ্রনাথ পাহাড় অবস্থিত। সীতাকুণ্ডের পূর্বদিকে চন্দ্রনাথ পাহাড় আর পশ্চিমে সুবিশাল সমুদ্র ।

 

 

 

                                                                                                                     ইতিহাস:::::::::::::::::::

কথিত আছে নেপালের একজন রাজা স্বপ্নে আদিষ্ট হয়ে বিশ্বের পাঁচ কোনে পাঁচটি শিবমন্দির নির্মান করেন। এগুলো হলো নেপালের পশুপতিনাথ, কাশিতে বিশ্বনাথ, পাকিস্তানে ভুতনাথ, মহেশখালীর আদিনাথ আর সীতাকুন্ডে চন্দ্রনাথ।


প্রাচীন ধর্মগ্রন্থ ও ইতিহাস ঘাঁটলে জানা যায় প্রাচীন কালে এখানে মহামুনি ভার্গব বসবাস করতেন।অযোদ্ধার রাজা দশরথের পুত্র রামচন্দ্র তার বনবাসের সময় এখানে এসেছিলেন।মহামুণি ভার্গব তাঁরা আসবেন জানতে পেরে তাঁদের স্নানের জন্য তিনটি কুণ্ড সৃষ্টি করেন এবং রামচন্দ্রের এখানে ভ্রমণ কালে তাঁর স্ত্রী সীতা এই কুণ্ডে স্নান করেন।এই কারনেই এখানকার নাম সীতাকুণ্ড বলে অনেকে ধারনা করেন।

 

 

 


নব্যপ্রস্তর যুগের দিকে সীতাকুণ্ডে মানুষের বসবাস শুরু হয় বলে ধারনা করা হচ্ছে;এখান থেকে আবিষ্কৃত প্রস্তর যুগের আসামিয় জনগোষ্ঠীর হাতিয়ার গুলো তারই স্বাক্ষ বহন করে।১৮৮৬ সালের দিকে এখানথেকে নব্যপ্রস্তর যুগের অশ্মীভূত কাঠের তৈরী হাতিয়ার পাওয়া যায় বলে ভারতীয় প্রত্নতত্ববিদ রাখালদাশ বন্দোপাধ্যায় তার বই "বাংলার ইতিহাস (১ম সংখ্যা ১৯১৪সাল)"এ উল্লেখ করেন।১৯১৭ সালের দিকে ব্রিটিশ খনিতত্ববিদ ডঃ যে কোগিন ব্রাউন প্রাগৈতিহাসিক যুগের কিছু কেল্ট এবং প্রচুর পরিমানে নুড়িপাথর আবিস্কার করেন, তবে এগুলো প্রাগৈতিহাসিক কোন স্থাপনা বা অস্ত্র তৈরীর কাজে ব্যবহৃত হতো কিনা এবং কোন সময়কার তা প্রত্নতত্ববিদরা সঠিক ভাবে জানাতে পারেননি।


তবে ৬ষ্ঠ ও ৭ম শতাব্দীর দিকে চট্টগ্রাম অঞ্চল আরাকান রাজ্যের অন্তর্ভূক্ত ছিল।পরবর্তী শতাব্দীতে এই অঞ্চল পাল সম্রাট ধর্মপাল দ্বারা (৭৭০-৮১০ খ্রীঃ)শাসিত হয়।বাংলার সুলতানি বংশের প্রথম সুলতান সোনারগাঁও এর সুলতান ফখরুদ্দীন মুবারক শাহ্ (১৩৩৮-১৩৪৯ খ্রীঃ)১৩৪০ খ্রীষ্টাব্দে এ অঞ্চল অধিগ্রহন করেন।১৫৩৮ খ্রীষ্টাব্দে বাংলার সুলতানি বংশের শেষ সুলতান সুলতান গীয়াস উদ্দীন মুহাম্মদ শাহ্ যখন সুর বংশের শের শাহ্ সুরির হাতে পরাজিত হন তখন এ এলাকা আবার আরাকান রাজ্যের অর্ন্তভূক্ত হয়।১৫৩৮ থেকে ১৬৬৬ সালের মধ্যে পর্তূগীজরা চট্টগ্রাম অঞ্চলে আসে এবং এখানে আরাকানীদের বংশধরদের সাথে একত্রে এই এলাকা শাসন করতে থাকে।এ এলাকা প্রায় ১২৮ বছর তাদের শাসনাধীন ছিল।১৫৫০ সালের দিকে এর কিছু এলাকা পাগনার আক্রমনকারীদের দখলে চলে যায়।১৫৬৬সালে মুঘল সেনাপতি বুজরুগ উম্মে খান এ এলাকা দখল করে নেন।

 

 


১৭৫৭ সালে পলাশীর প্রান্তরে বাংলার শেষ নবাব সীরাজদ্দৌলার ইংরেজ ইষ্টইন্ন্ন্ডিয়া কোশ্পানীর কাছে পরাজয়ের সাথে সাথে বাংলার অন্যান্য অংশের মত সীতাকুণ্ডও ইংরেজদের শাসনে চলে যায়।বাঙ্গালী জনসংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় এখানকার অবাঙ্গালী জনগোষ্ঠী দলগত ভাবে এই এলাকা ত্যাগ করে এবং পার্বত্য অঞ্চলেরদিকে চলে যায়।ফেব্রুয়ারী ১৯০৮ সালে স্বদেশী আন্দোলনের সময় এ এলাকা স্বদেশীদের হাতে চলেযায় এবং কেন্দ্রীয় ভাবে কলকাতা থেকে নিয়ন্ত্রিত হতে থাকে।ভারতীয় পেট্রোলিয়াম কোম্পানী ১৯১০ সালে এখানে খনিজ সম্পদ অনুসন্ধানের কাজ শুরু করে এবং এটিই পূর্ব বাংলার প্রথম অনুসন্ধান কাজ।এর পর ১৯১৪ সালে আরো চারবার খনিজ সম্পদ উত্তোলনের চেষ্টা করা হয়, কিন্তু সবগুলো চেষ্টাই ব্যার্থ হয়।

 

 


১৮৫৭ সালে ভারতে বিদ্রোহের পর ইষ্ট ইন্ডিয়া কোম্পানীর থেকে ইংরেজ কেন্দ্রীয় সরকার এই এলাকার শাসন ভার নেয়।আর ১৯৪৭ সালে যখন ব্রিটিশ সরকার যখন ভারত উপ মহাদেশকে ভারত, পাকিস্তান দুটো দেশে ভাগ করে স্বাধীন করে দেয় তখন এই এলাকা পূর্ব পাকিস্তান নামে পরিচিতি লাভ করে।১৯৬৪ সালে এখানে শিপব্রেকিং ইর্য়াডের যাত্রা শুরু হয়।ফৌজদারহাটের উপকূলবর্তী এলাকায় এমভি এলপাইন নামে ২০,০০০ মেট্রিক টনের একটি জাহাজ কাটার মাধ্যমে চট্টগ্রাম ইস্পাত হাউস নামে প্রতিষ্ঠান যাত্রা শুরু করে।১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় এ এলাকা মেজর (অবঃ) রফিকুল ইসলামের নিয়ন্ত্রনাধীন ২নং সেক্টরের অর্ন্তভূক্ত ছিল।স্বাধীনতার পর ১৯৭৪ সালে আবার শিপব্রেকিং ইয়ার্ডের কাজ শুরু হয় ১৯৭১ সালে কর্ণফুলী নদীতে ধংস প্রাপ্ত একটি জাহাজ কাটার মাধ্যমে।




এক নজরে দেখে আসা যাক এই সীতাকুন্ডের ঐতিহ্যবাহী এবং ধর্মীয় স্থান সমূহঃ

 

 

 

 


                                                                                            অক্ষয়বটঃ::::::::::::::::::::::::::::::::::

 

 


ব্যাসকুণ্ডের পশ্চিম পাড়ে এবং ভৈরব মন্দিরের বাম পাশে একটি বিশাল বট বৃক্ষ আছে, এটিই অক্ষয় বট নামে পরিচিত।

সয়ম্ভূনাথ মন্দিরের উত্তর পাশে অন্নপূর্ণা ও বিষ্ণু মন্দির অবস্থিত।এখানে দেবী অন্নপূর্ণা এবং ভগবান বিষ্ণুর মূর্তী আছে।এখানে সারা বছর ধরে প্রতিদিন পূজা হয়।

 

 

 


বাড়বকুণ্ডঃ

সীতাকুণ্ড রেলষ্টেশন থেকে ৩ মাইল দক্ষিনে বাড়বাকুণ্ড রেলষ্টেশন অবস্থিত।আর বাড়বাকুণ্ড রেলষ্টেশন থেকে ১ মাইল পূর্বে পাহাড় ঘেরা স্থানে বাড়বাকুণ্ড মন্দির টি অবস্থিত।এটি একটি দোতালা মন্দির, বাড়বাকুণ্ড এর নিচতলায় অবস্থতি।এর উত্তর পাশে বাসীকুণ্ড এবং এর পাশেই রয়েছে কাল ভৈরব মন্দির।এই কুণ্ডের জল গরম জলের মত শব্দ করে ফুটছে।স্থানীয় ভাবে একে অগ্নিপ্রসবনও বলে।

 

 

 


বারৈয়াঢালা আশ্রম

সীতাকুণ্ড সদর থেকে ১০ কি.মি. উত্তরে বারৈয়াঢালা নামক স্থানে বারৈয়াঢালা আশ্রম অবস্থিত।এটি নারায়ন আশ্রম নামেও পরিচিত।শ্রীমৎ স্বামী মাধবানন্দ মহারাজ এই আশ্রম প্রতিষ্ঠা করেন।এখানে সারাবছর ধরে প্রতিদিন ভগবান শ্রী নারায়ন দেবের পূজা হয়।

 

 

 

 

 


ব্যাসকুণ্ড

"পুরান" অনুসারে মহামুনি ব্যাসদেব এবং অন্যান্য ঋষিগন সহ এখানে অশ্বমেধ যজ্ঞ করেছিলেন।এখানে লোকমুখে প্রচলিত আছে যে শিবচর্তুদশী তিথিতে সয়ম্ভূনাথ মন্দির দর্শনের আগে এ কুণ্ডে স্নান করতে হয়।পূর্বে এটি প্রায় ৬ বর্গফুটের সমান ছিল।কিন্তু তীর্থ যাত্রীদের সুবিধার্থে এটিকে পুকুরের আকার দেয়া হয়েছে।

 

 

 

 

 


ছত্র শিলাঃ

 

 

 


সয়ম্ভুনাথ মন্দির হতে বিরুপাক্ষ মন্দির যাবার পথে রাস্তার পূর্ব পাশে একটি বড় শিলাখণ্ড দেখাযায় যা ছত্র শিলা নামে পরিচিত, কেউ কেউ একে স্বরস্বতী শিলাও বলে থাকে।

 

 

 


চন্দ্রনাথ মন্দিরঃ

বিরুপাক্ষ মন্দির থেকে চন্দ্রনাথ মন্দিরের দুরত্ব প্রায় আধা মাইল।এটি ভগবান শিবের একটি বড় মন্দির এবং এখানকার প্রধান মন্দির।এ মন্দিরের অধিষ্ঠিত ভগবান শিবের নাম এখানে চন্দ্রনাথ।এই মন্দির সমুদ্র পৃষ্ঠ থেকে ১২-১৩শ ফুট উচ্চতায় অবস্থিত।এটি বৌদ্ধ ধর্মালম্বীদেরও একটি গুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয় স্থান।এই মন্দিরে প্রতিদিন পূজা হয়, তবে প্রতিবছর শিবরাত্রি তথা শিবর্তুদশী তিথিতে বিশেষ পূজা হয়;এই পূজাকে কেন্দ্র করে সীতাকুণ্ডে বিশাল মেলা হয়।

 

 

 


কেন্দ্রীয় মহাশ্মশানঃ

ব্যাসকুণ্ড হতে কিছু দূর পূর্বে হেঁটে গেলেই রাস্তার বাম পাশে চোখে পরবে সীতাকুণ্ড কেন্দ্রীয় মহাশ্মশান।এটি বাংলাদেশে একমাত্র শ্মশান যেখানে হিন্দু এবং বৌদ্ধরা তাদের মৃতদেহ গুলোর শেষকৃত্বানুষ্ঠান সম্পন্ন করে।কিন্তু বর্তমানে এখানে শুধু হিন্দুদেরই শেসকৃত্বানুষ্ঠান হয়।এখানে ভগবান শিব এবং কালী মাতার মন্দির আছে।

 

 

 

 


বিরুপাক্ষ মন্দির

এটিও ভগবান শিবের মন্দির।এ মন্দিরে বিরাজমান দেবতা বিরুপাক্ষ শিব নামে পরিচিত।সয়ম্ভূনাথ মন্দির থেকে চন্দ্রনাথ মন্দিরে যাবার পথে এ মন্দিরটি দেখা যাবে।

 

 


দধি ভৈরব

বাড়বকুণ্ড মন্দিরে উঠার সিঁ‌ড়ির পাশে তেতুল গাছের নিচে দধি ভৈরব অবস্থিত (বর্তমানে তেতুল গাছটি নেই)।এটিএকটি গোলাকৃতির শিলাখণ্ড,এর উপরের দিকে একটি গর্ত আছে যেখানে দুধদিলে তা নিমিসেই দই-এ পরিণত হয়।এই কারনেই একে দধি ভৈরব বলে।

 

 

 


দধিকুণ্ডঃ
লবণাক্ষকুণ্ডের অতিরিক্ত পানি একটি সরু পথদিয়ে বের হয়ে লবণাক্ষকুণ্ডের কিছু দূরেই আরেকটি কুণ্ডের সৃষ্টি করেছে যা দধিকুণ্ড নামে পরিচিত।

 

 


গয়াক্ষেত্রঃ

সয়ম্ভুনাথ মন্দির থেকে সামান্য পূর্বদিকে গেলে চন্দ্রনাথ মন্দিরে যাবার পথের বাম পাশে ৩০/৪০টি সিঁ‌ড়ি নিচেরদিকে গেলেই গয়াক্ষেত্র দেখা যাবে।এখানে একটি কুণ্ডের মত আছে ,ইতিহাস মতে এই কুণ্ডের মধ্যেদিয়ে মন্থন নদী পূর্ব থেকে পশ্চিমে বয়ে গেছে।কিন্তু প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের কারনে বর্তমানে তা শুকিয়ে গেছে।এখানে পূর্বপুরুষদের উদ্দেশ্যে পিণ্ডদান করা হয়।

 

 

 


গুরুধুনীঃ

লবণাক্ষমন্দির হতে সহস্রধারা যাবার পথে রাস্তার উত্তরপশ্চিম কোণে গুরুধুনী অবস্থিত।এখানে সারা বছর ধরে পাহাড়ের গায়ে আগুন জ্বলছে।লোকমুখে প্রচলিত আছে যে এখানকার আগুন স্পর্শ করলে শিবলোক প্রাপ্ত হয়।

 



হনুমান মন্দিরঃ

সয়ম্ভুনাথ মন্দিরের কাছা কাছি সীতা মন্দিরের সামনে পাহাড়ের উপরে হনুমান মন্দির অবস্থিত।

 

 

 


জগন্নাথ মন্দিরঃ

সীতাকুণ্ডের মহন্তের আস্তানার পাশেই জগন্নাথ মন্দির অবস্থিত।এখানে ভগবান জগন্নাথ, বলরাম ও সুভদ্রার মূর্তি আছে।বর্ষাকালে (আষাঢ় মাসে) এখানে রথযাত্রা উৎসব অনুষ্ঠীত হয়।এখানে সম্ভুনাথ মন্দিরের পরে আরও একটি জগন্নাথ মন্দির আছে।

 

 

 

 


জ্বালামুখী কালীবাড়ীঃ

 


বাড়বাকুণ্ড রেলওয়ে ষ্টেশন থেকে বাড়বাকুণ্ড মন্দিরে যাবার পথে রাস্তার ডান পাশে জ্বালামুখী কালীবাড়ী অবস্থিত।এখানে কালী মাএর নিম কাঠের নির্মীত মূর্তী আছে।

 

 


জ্যোতির্ময়

ভবানী মন্দিরের পাশেই ভগবান শিবের আরো একটি মন্দির আছে এটিই জ্যোতির্ময় নামে পরিচিত।পূর্বে এখানে শিলা খণ্ডের উপর আগুন জ্বলত, বর্তমানে প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের কারনে তা আর দেখাযায় না।

 

 



কর্কর নদীঃ

 

 


কুমারীকুণ্ড থেকে একটি ছোট খাল (স্থানীয় ভাষায় "ছড়া") কুমিরা গ্রামের দিকে প্রবাহিত হয়ে সমুদ্রে গিয়ে মিলেছে।মানুষের বিশ্বাস এটাই ধর্মীয় গ্রহন্থে উল্লেখিত কর্কর নদী।

 

 

 

 


শ্রীকৃষ্ণ মন্দিরঃ

এটি ভগবান শ্রী কৃষ্ণের মন্দির।এখানে সারা বছর ধরেই পূজা হয়, তবে ভগবান শ্রী কৃষ্ণের জন্মাষ্টমীর সময় এখানে বিশেষ পূজা এবং বিভিন্ন ধরণের অনুষ্ঠান হয়।

 

 

 

 

 


কুমারীকুণ্ডঃ

 


সীতাকুণ্ড থেকে প্রায় ৫ মাইল দক্ষিনে কুমিরা রেলওয়ে ষ্টেশন।এই রেলওয়ে ষ্টেশন থেকে প্রায় ৬ মাইল পূর্বদিকে গেলে পাহাড়ে ঘেরা বনের মধ্যে একটি ইটের বেষ্টনী নির্মীত কুণ্ড দেখা যাবে তাই কুমারীকুণ্ড।এখানে পানির মধ্যে আগুণ জ্বলছে এবং এখানকার পানি খুবই উত্তপ্ত।এটিও হিন্দু সম্প্রদায়ের একটি ধর্মীয় স্থান।

 

 

 

 

 


লবণাক্ষ তীর্থঃ

সীতাকুণ্ড সদর থেকে ৩ মাইল উত্তরে ছোটদারোগারহাট নামক স্থানে লবণাক্ষ তীর্থ অবস্থিত।এই লবণাক্ষ তীর্থ চম্পকারণ্য নামেও পরিচিত।সহস্রধারা ঝর্ণার পানি এই এলাকার উপর দিয়ে প্রবাহিত।ছোটদারোগারহাট থেকে ৩ মাইল পূর্বে পুকুর পারে একটি মন্দির দেখা যায় যা লবণাক্ষ মন্দির, এই মন্দিরের ভিতরেই লবণাক্ষ কুণ্ড অবস্থিত।এই কুণ্ডের পানি খুবই লবণাক্ত এবং এর পাশেই ছোট ছিদ্র পথে আগুণ জ্বলছে।বর্তমানে এখানে সূর্যকুণ্ডের পাশেই সহস্রধারা ঝর্ণার পানি আটকে সেচকাজে ব্যবহারের জন্য বাধঁ দেয়া হয়েছে, যা এখানকার সৌর্ন্দয্য আরো বৃদ্ধি করেছে।এই বাধঁ পর্যন্ত এখন গাড়ীতে যাওয়া যায়।

 

 

 

 


রামকুণ্ড ও লক্ষণকুণ্ডঃ

রাম, সীতা ও লক্ষণ তাদের বনবাসের সময় তাঁরা শরভঙ্গ মুনির আশ্রমে গিয়েছিলেন।তখন মুনি তাঁদের পূর্বদেশ ভ্রমন করতে বলেন।এদিকে মহামুনি ভার্গব ধ্যানয্যোগে জানতে পেরে তিনি তাদের স্নানের জন্য ৩টি ঊষ্ণ পানির কুণ্ড সৃষ্টি করেন।তারা সীতাকুণ্ড পাহাড় ভ্রমণের সময় এই কুণ্ডে স্নান করেন।এই ৩টি কুণ্ডের মধ্যে যেটিতে রাম স্নান করেছিলেন সেটিই রামকুণ্ড নামে পরিচিত।তবে বর্তমানে কুণ্ডগুলো শুকিয়েগেছে এবং ইটের দেয়াল দিয়ে চিহ্নিত করে রাখা আছে।

 

 

 

 

 

 

মোহান্তের আস্তানাঃ

মোহান্ত মহারাজ শ্রী শ্রী চন্দ্রনাথ ধামের তীর্থগুরু।তিনি এ স্থানে বাস করতেন বলে তাঁর নাম অনুসারে এ স্থানের নাম হয় মোহান্তের আস্তানা।এখানে হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রায় সকল ধরনের পূজা সারা বছর ধরে করা হয়।

 

 

 

 

 

 


পঞ্চবটিঃ

মূলত এখানে ৫ ধরনের গাছ আছে, তাই এর নাম পঞ্চবটি।ইংরেজী ১৯০১ সালে স্বামী বিবেকানন্দ তাঁর মা কে নিয়ে সীতাকুণ্ডের চন্দ্রনাথ মন্দির দর্শন করতে এসেছিলেন।বিপদজ্জনক এবং ঘন জঙ্গল হওয়ার কারনে তখন তিনি মা কে নিয়ে চন্দ্রনাথ মন্দিরে যেতে পারেননি ও এখানই মহাদেবের পূজা করেন।তাঁর সীতাকুণ্ডে পর্দাপনের স্মৃতি রক্ষাত্তে সীতাকুণ্ড শ্রী শ্রী রামকৃষ্ণ সেবাশ্রম এই স্থান সংরক্ষণ করে রেখেছে।

 

 

 

 

 

 


পাতালপুরীঃ

বিরূপাক্ষ মন্দির থেকে চন্দ্রনাথ মন্দিরে যাবার পথে রাস্তার পূর্ব দিকে আধা মাইলের মত নিচের দিকে গেলে পাতালপুরী দেখা যায়।এখানে হর গৌরী, দ্বাদশ শালগ্রাম, বিশ্বেশ্বর শিব, পাতালকালী, অষ্টবসু, রুদ্রেশ্বর শিব, গোপেশ্বর শিব, পঞ্চানন শিব, মন্দাকিনী, পাতাল গঙ্গা সহ অন্যান্য দেবদেবী রয়েছেন।তবে গহীন অরণ্য এবং বিপদজ্জনক স্থান হবার কারনে মানুষ এখানে সহজে যায় না।

 

 

 

 

 


রামকৃষ্ণ সেবাশ্রমঃ

১৯৯১ সালের ২৯শে এপ্রিলের প্রলয়ংকারী ঘুর্ণিঝড় আঘাত আনার পর সীতাকুণ্ডের ঘুর্ণিদুর্গত মানুষের সাহায্যার্থে রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের সাধু, সন্যাসীরা এখানে ত্রানসামগ্রী নিয়ে এসেছিলেন।তাদের ত্রাণ কর্মকাণ্ডে এখানকার মানুষ খুবই খুশী হয়েছিল এবং এই তীর্থস্থানে একটি রামকৃষ্ণ সেবাশ্রম স্থাপনের জন্য উদ্যোগ গ্রহন করে।তারপর দ্রুত তা তৈরীর কাজ শুরু হয় এবং এক বছরের মাথায় কাজ শেষ হয়।১৯৯২ সালের ১লা মে আরম্বর পূর্ণ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের মাধ্যমে শ্রী রামকৃষ্ণ সেবাশ্রম তাদের জনহিতকর এবং ধর্মীয় কার্যক্রম শুরু করে।রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশন ঢাকা, বাংলাদেশের অধ্যক্ষ শ্রীমৎ স্বামী অক্ষরানন্দজী মহারাজ এই অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।জনহিতকর কাজ হিসাবে এখানে প্রতিমাসের শেষ শুক্রবার সাধারণ সাস্থ্যসেবা ও বিনামূল্যে ঔষধ প্রদান সহ চট্টগ্রাম লায়ন্স ক্লাবের সহায়তায় চক্ষু চিকিৎসা শিবির করা হয়।এগুলো ছাড়াও দরিদ্র মানুষের মধ্যে ত্রাণসামগ্রী বিতরন এবং নানা ধরনের সাহায্য সহযোগীতা করা হয়।দেশ-বিদেশের অনেক স্বনামধন্য সন্যাসী এবং ব্যক্তিরা এই আশ্রম পরিদর্শন করে গেছেন।

 

 

 

 

 


সহস্রধারাঃ

সীতাকুণ্ড সদর থেকে প্রায় ৩ মাইল উত্তরে ছোটদারোগারহাট নামক স্থানে সহস্রধারা অবস্থিত।ছোটদারোগারহাট বাজার থেকে প্রায় ৩-৪ মাইল পূর্বে এটি অবস্থিত।এটি মূলত একটি ঝর্ণা এবং প্রায় ৩০০ মিটার উচুঁ পাহাড়ের চুড়াঁ থেকে পরছে।ইকোপার্ক তৈরীর পর এই এলাকার একটি ঝর্ণাকে সহস্রধারা নামকরন করা হয়, তবে তা আসলে সহস্রধারা ঝর্ণা নয়।ছোটদারোগারহাটে অবস্থিত সহস্রধারা ঝর্ণাই আসল এবং হিন্দু সম্প্রদায়ের একটি ধর্মীয় স্থান।

 

 

 

 

 

 


শংকর মঠঃ

শংকর মঠ সীতাকুণ্ডের ঐতিহ্যবাহী আশ্রম গুলোর মধ্যে একটি।এটি শংকরাচার্য্যের অনুসারিদের একটি আশ্রম।এখানে একটি অনাথআশ্রম, একটি সংস্কৃত কলেজ (বাংলাদেশ সরকার অনুমোদীত) এবং একটি দাতব্য চিকিৎসালয় আছে।

 

 

 

 

 

 

 

 

স্বয়ম্ভূনাথ মন্দিরঃ

ভবানী মন্দির থেকে ২০-২৫ টি সি‌ড়িঁ উপরের দিকে উঠলে আপনি অনেকগুলো দেব-দেবীর মন্দির সংলগ্ন স্থানে আসবেন।এখানকার সবচেয়ে বড় এবং প্রধান মন্দিরটিই হল সয়ম্ভূনাথ মন্দির।এটি মূলত ভগবান শিবের মন্দির।স্বয়ম্ভূনাথের অপর নাম ত্রায়ম্বদীশ্বর।তাঁর মাথায় একটি অর্ধচন্দ্রাকৃতির গোলাকার ছিদ্র আছে।এখানে সারা বছর ধরেই পূজা হয় এবং শিবর্তুদশী অর্থাৎ শিবরাত্রীতে বিশেষ পূজা হয়।

 

 

 

 

 


সীতাকুণ্ডঃ

রাম, সীতা ও লক্ষণ তাদের বনবাসের সময় তাঁরা শরভঙ্গ মুনির আশ্রমে গিয়েছিলেন।তখন মুনি তাঁদের পূর্বদেশ ভ্রমন করতে বলেন।এদিকে মহামুনি ভার্গব ধ্যানয্যোগে জানতে পেরে তিনি তাদের স্নানের জন্য ৩টি ঊষ্ণ পানির কুণ্ড সৃষ্টি করেন।তারা সীতাকুণ্ড পাহাড় ভ্রমণের সময় এই কুণ্ডে স্নান করেন।এই ৩টি কুণ্ডের মধ্যে যেটিতে সীতা স্নান করেছিলেন সেটিই সীতাকুণ্ড নামে পরিচিত।তবে বর্তমানে কুণ্ডগুলো শুকিয়েগেছে এবং ইটের দেয়াল দিয়ে চিহ্নিত করে রাখা আছে।

 

 

 

 

 



সূর্যকুণ্ডঃ

লবণাক্ষ কুণ্ড হতে কিছুদূর পূর্বেই সূর্যকুণ্ড অবস্থিত।এখানে একটি ছোট মন্দির আছে।

 

 

 

 

 


উনকোটি শিবঃ

 


সয়ম্ভূনাথ মন্দির থেকে বিরূপাক্ষ মন্দিরে যাবার পথে রাস্তার বাম পাশে গিরি গুহার অভ্যন্তরে উনকোটি শিব অবস্থিত।কোন এক সময় এখানদিয়ে ৮টি নদী প্রবাহিত ছিল।এখানে শত-সহস্র শিবলিঙ্গ আছে এবং এগুলো সারা দিনরাত মন্দাকিনীর পানিতে স্নান করছে।এটিও খুবই বিপদজনক এলাকা মানুষ সাধারণত এস্থানে যায় না।

 

 

 

 

 


ভবানী মন্দিরঃ

প্রাচীন কাহিনীতে উল্লেখ আছে যে, শিবের স্ত্রী সতীর পিতা রাজা দক্ষ যগ্যানুষ্ঠান করছিলেন, কিন্তু তিনি জামাতা শিবকে ছাড়া আর সকল দেব-দেবীকে সে অনুষ্ঠানে আমন্ত্রন করেন।এই অপমান সহ্য করতে না পেরে সতী সে যগ্যে আত্নাহূতি দিয়ে দেহত্যাগ করেন।ভগবান শিব তখন সতীর মৃতদেহনিয়ে প্রলয় নৃত্য করতে থাকেন।পুরো সৃষ্ট ধংস হবে দেখে ভগবান বিষ্ণু শিবের প্রলয় নৃত্য বন্ধ করার জন্য তার সুর্দশন চক্র দিয়ে সতীর দেহ খন্ড খন্ড করে ফেলেদেন।এই দেহাবশেষ ৫১ খন্ড করে ৫১ স্থানে ফেলা হয়, তা থেকে ৫১ মাতৃপীঠ বা শক্তিপীঠের সৃষ্টি হয়েছে।পুরানে উল্লেখ আছে যে, সীতাকুণ্ডের চন্দ্রনাথ পাহাড়ে সতীর ডান হাত পরেছে।এই পীঠস্থানটিই ভবানী মন্দির, এই মন্দিরের অধিষ্ঠাত্তি দেবী কালী মাতা।এটি চন্দ্রনাথ পাহাড়ের সয়ম্ভূনাথ মন্দিরের নীচে অবস্থিত।

 

 

 

 

 


ভৈরব মন্দিরঃ

ব্যাসকুণ্ডের পশ্চিম পাড়ে ভৈরব মন্দির অবস্থিত।এই মন্দিরে দ্বারপাল ভৈরব, ব্যাসেশ্বর শিব, চণ্ডী প্রভূতি সহ বিভিন্ন দেব দেবীআছেন।এই মন্দিরকেই ভৈরব মন্দির বলে।

 

 

 

 

 

 

 


ভোলানন্দ গিরি আশ্রমঃ

এটি সীতাকুণ্ডের পুরাতন আশ্রম গুলোর মধ্যে একটি।এখানে সারা বছর ধরে দূর্গা পূজা, কালী পূজা, শ্রী কৃষ্ণের রাসযাত্রা, ঝুলন যাত্রা সহ বিভিন্ন পূজা অনুষ্ঠিত হয়।পূর্বে কোন এক শিবর্তুদশী মেলার সময় শ্রীমৎ স্বামী ভোলানন্দ গিরি মহারাজ এখানে এসে এই আশ্রম প্রতিষ্ঠা করেন।তাই এই সময় এখানে বিশেষ পূজা, হোম, নামর্কীতন